নওগাঁ প্রতিনিধি►
সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের হুফুপ সানাইয়ারআল মনসুরা শিল্প তালুকে অবস্থিত একটি ফার্নিচারের কারখানায় আগুনে পুড়ে নিহত ৯ বাংলাদেশির মধ্যে বারেক সরদার (৪৫) ও রমজান আলী (৩৩) নামে দুইজনের বাড়ি নওগাঁর আত্রাই উপজেলায়।
তাদের দুজনের বাড়িতেই চলছে শোকের মাতম। স্বজনদের দাবী দ্রুতই যেন তাদের সন্তানের মরদেহ তাদের কাছে ফেরত দেয়া হয়। শুক্রবার (১৪ জুলাই) রিয়াদ থেকে প্রায় ৩৫০কিলোমিটার দূরে অবস্থিত সৌদি আরবের দাম্মামের হুফুপ শহরের সানাইয়ারআল মনসুরা শিল্প এলাকায় সন্ধ্যার সময় এ ঘটনা ঘটে।
সেখানে নিহত বারেক সরদার আত্রাই উপজেলার বিশা ইউনিয়নের উদয়পুর মন্ডলপাড়া গ্রামের মৃত রহমান সরদারের ছেলে আর অপরজন রমজান আলী সাহাগোলা ইউনিয়নের ঝনঝনিয়া গ্রামের মৃত-আজিজার রহমানের ছেলে। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে অনেকটাই পাগলপাড়া নিহত দুইজনের পরিবারের সদস্যরা।
নিহত বারেকের ভাই শাহাদাত হোসেন জানান, বারেক ২০০৬ সালে সৌদি আরবে যায়। এরপর সর্বশেষ ২০১০ সালে বাড়িতে এসেছিল। এরপর আবারো যায় সৌদি আরবে। তার দুই মেয়ে রয়েছে। দুই বছর আগে স্ট্রোক করে অচল হয়ে যান বারেক সরদার। দীর্ঘ দেড় বছর চিকিৎসা শেষে পুণরায় সৌদি আরবের দাম্মাম শহরের একটি সোফা কারখানায় কাজ শুরু করে বারেক। সরকারের কাছে আমার দাবী দ্রæত যেন আমার ভাইয়ের মরদেহ আমাদের কাছে পৌছে দেয়া হয়।
অপরদিকে পিতাহারা গরীব পরিবারের জমিজমা বিক্রি করে ২০১৯ সালে রমজান আলী সৌদি আরব যায়। এরপর চলতি বছরে ছয় মাসের ছুটি শেষে আবার সৌদি যায় রমজান আলী। ছুটিতে বাড়িতে এসে নতুন বাড়ির নির্মাণ কাজ শুরু করেন। সেই বাড়িতে মা, বোন ও বিয়ে করে বউকে নিয়ে থাকার স্বপ্ন দেখেছিলো রমজান আলী। রমজান আলী দুই ভাই ও বোন। ভাই-বোনের মধ্যে দ্বিতীয় রমজান। সবার ছোট ভাই ইমরান। তিন কক্ষের মাটির ঘরে তারা বসবাস করতেন। স্বামী পরিত্যক্তা বোন সুমি তার ছেলে সাজিদকে নিয়ে মায়ের বাড়িতে থাকেন। সংসারের সব খরচ রমজান বহন করতেন। তাই স্বজনদের দাবী দ্রæত লাশগুলো দেশে এনে দাফনসহ ক্ষতিপূরন দেওয়া হোক।
আত্রাই থানার ওসি তারেকুর রহমান সরকার বলেন, খবর পাওয়ার পর থেকেই দুই পরিবারের প্রতি নজর রেখেছি এবং সব সময় খোঁজখবর নিচ্ছি। নিহতদের মরদেহ আসলে পরিবারের সহযোগিতায় সুষ্ঠুভাবে দাফন সম্পন্ন করতে পুলিশের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোতিা প্রদান করা হবে।